ইতিহাস

ন্যাশনাল লেবার পার্টি (সংক্ষেপে এনএলপি) বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল।

লেবার পার্টি ১৯৭৪ সালের ১৭ই আগস্ট মাওলানা মতিনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী ১৩ মিনিটের সংসদে রাষ্ট্রীয় ফরমান জারি করে সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করলে লেবার পার্টির কার্যক্রম স্থগিত হয়। ১৯৭৭ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় রাজনীতি প্রবর্তন করলে ১৯৭৭ সালের ২২ অক্টোবর পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ২৯শে আগস্ট রাজধানী ঢাকায় তোফখানা রোডে শিশু কল্যান একাডেমিতে সাংবাদিক সম্মেলনে নাম বদল করে ন্যাশনাল লেবার পার্টি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মোঃ ফারুক রহমান, মহাসচিব এ্যাড. জাকির হোসেন। ১৯৭৪ সালে মাওলানা আবদুল মতীনের নেতৃত্বে। প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরেই ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হলে লেবার পার্টিও নিষিদ্ধ হয়। ১৯৭৭ সালে শহীদ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ দিলে বাংলাদেশ লেবার পার্টি ১৯৭৭সালের ২২ অক্টোবর মাওলানা আবদুল মতীন ও মাওলানা গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে পুর্নজীবন ফিরে পায়। পরে শহীদ জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ৭ মে ১৯৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠিত হলে- মশিউর রহমান যাদু মিয়ার ন্যাপ, শাহ আজিজুর রহমানের মুসলীম লীগ, বিচারপতি সাত্তারের জাগদল, মাওলানা মতীনের লেবার পার্টি, কাজী জাফরের ইউপিপি ও তফসিলি জাতি ফেডারেশন জোটের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়।

ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মোঃ ফারুক রহামন ২০০৭ সাল থেকে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এই দলটি জাতীয়তাবাদী চেতনায় সমমনা দল হিসাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। ২০১২ সালে ১৮ এর্পিল বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোট (তৎকালীন ২০ দলীয় জোট) গঠিত হলে লেবার পার্টি অন্যতম শরিকদল হিসাবে জোটের রাজনীতিতে ভূমিকা রেখেছিল।

২০২২ সালে বিশ দলীয় জোট বিলুপ্ত হলে দলটি বারো দলীয় জোটে শরীক হয়। লেবার পার্টির বিএনপির নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলন সংগ্রামের রাজপথে শরিকদের মধ্যে অন্যতম হিসাবে রাজপথে সক্রিয় রয়েছে।

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা

২০২৪ সালে ১৮ জুলাই “মেধার মূল্যায়ন করে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ন্যায় সংগত ছাত্র আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার গনহত্যা চালায়। ছাত্র আন্দোলনের দাবী ক্রমশ দানা বাঁধতে থাকে ফ্যাসীবাদী সরকারের পতনের আন্দোলনে। ফ্যাসীবাদী সরকার উক্ত আন্দোলন ধূলিসাৎ করতে লেলিয়ে দেয় প্রশাসনের পুলিশ বাহিনী, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী দোসরদের। নির্যাতনের মাত্রা ছড়িয়ে যায় ছাত্রসহ সাধারণ জনগনের উপর। ছাত্রদের আন্দোলন রুপ নেয় গণআন্দোলনে।

শাহবাগ অভিমুখে বিক্ষোভ কর্মসূচী। ৫ আগষ্ট ২০২৪ ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থানে কোটি মানুষের মিলনমেলায় অংশ নিয়ে গনভবনের সামনে সেনাবাহিনীর ট্যাংকের সামনে ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মোঃ ফারুক রহমান সহ ন্যাশনাল লেবার পার্টি ও ন্যাশনাল ছাত্রমিশনের নেতাকর্মীরা।

ছাত্রদের দাবির সমর্থনে গনতান্ত্রিক আন্দোলনের বিএনপি, জামায়াত, ন্যাশনাল লেবার পার্টিসহ সকল গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সক্রিয় ভাবে আন্দোলনের কর্মসূচীতে অংশ নেয়। ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মোঃ ফারুক রহমানের নেতৃত্বে ২রা আগষ্ট ও ৩রা আগস্ট পুলিশের বাধা অতিক্রম করে লেবার পার্টি ও ছাত্রমিশনের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচীতে অংশ নেয়, শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে রাখে আন্দোলনের মাঠ। ৪ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্লকেডের সমর্থনে লেবার পার্টি ও ছাত্রমিশনের নেতাকর্মীরা পল্টন মোড় হতে মিছিল নিয়ে শাহবাগে জনসমাবেশে যোগ দিয়েছে। লেবার পার্টি দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আহবানে সাড়া দিয়ে ২০০৭ সালেই লায়ন মোঃ ফারুক রহমান, চারদলীয় জোটের পাশাপাশি সমমনা শক্তি হিসাবে বিএনপির সাথে যুক্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোট গঠিত হয়। লেবার পার্টি জোটের অন্যতম শরিক হিসাবে সকল আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে অংশ গ্রহন করে। এই ১৮ দলীয় জোট ক্রমে ১৯ দলীয় জোট ও ২০ দলীয় জোটে রূপ নেয়। বর্তমানে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছে।

nlp-p34